বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৩

Is this a newspaper or 16pages of editorial?!

১/ গতকাল ডেইলি-ষ্টার এর একটা হেডলাইন ছিল 'IMF praises reform efforts: Bangladesh may get $140.5m credit in Dec'. পুরা রিপোর্ট জুড়ে কত সুন্দর কথা বার্তা। 

৬ প্যারাগ্রাফ পরে একটা মাত্র লাইন - 'The lender thinks Bangladesh’s GDP (gross domestic product) growth would slip below 6 percent this fiscal year'. 

বুঝলাম না - দেশের বেশিরভাগ মানুষ কি ঘাস খায়? কোন খবরের গুরুত্ব বেশি তা বুঝি আমরা জানিনা? একটা দেশের জিডিপি ৬ এর নিচে চলে যাচ্ছে, আর খবরের হেডলাইন হচ্ছে 'IMF praises reform efforts....'. তার উপর আবার '... may get $140.5m credit in Dec' - যা আইএমএফ এর আগে থেকেই দেবার কথা ছিল। 

এসব বিজ্ঞ সংবাদ মাধ্যম নিজেদের মনে করেন বুদ্ধিজীবী আর বাকি সব রামছাগল। 

[Financial Express এর হেডলাইন "IMF projects real GDP growth below 6.0pc; lauds progress in macroeconomic policies"] 

=======================

২/ গতকাল একই পেপার এর আরেক হেডলাইন - 'He never let us read his books - recalls Farooq Maududi' 
ছবিতে দেয়া টুপি পরা সেই ভদ্রলোক। যে বখে যাওয়া, যে বাপ দ্বারা বাসা থেকে ২বার বিতারিত, মা যার বিরুদ্ধে কোর্টে যেতে বাধ্য হয়েছে, আর ভাইবোন্ যার বিরুদ্ধে পাকিস্তান মিডিয়াতে বক্তব্য দিতে বাধ্য হয়েছে - তাকে দিয়ে এনারা বলাচ্ছেন ধর্ম আর রাজনীতির নীতি কি হওয়া উচিত। ঘাদানিক গোষ্ঠী কবে থেকে ধর্মীয় রাজনীতির এক্সপার্ট হলো? 

এনারা হয়তো জানেন না - আবুল আলা মউদুদী কে, বিশ্বে তার পরিচিতি কি রকম আর তার চিন্তাধারার লেভেল কোন জায়গায়। 
প্লেগ্রুপে পড়া অবস্থায় পিএইচডি অধ্যায়নরতদের নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন তারা। 

গুগল এর দুনিয়া - সার্চ দিলেই মানুষ জানতে পারে অনেক কিছু।কিন্তু তবুও তারা ভাবে এদেশের বেশিরভাগ মানুষ কিছু জানেনা। আর ঘাদানিক গোষ্ঠির মুখপাত্র এই মুহুর্তে এদেশে তারাই হবে - যারা জনগনকে ভাবে রামছাগল। 

=======================

৩/ আজকে সকাল পর্যন্ত একই পেপার এ হেডলাইন ছিল, 'Explosion rocks ....' 
সকাল যেতে না যেতে সেটা হয়ে গেল 'Over 30 grenades stored there'. নিচে ছোট করে লেখা 'says police'. 

আবার একটা ছবিও দিয়েছে - যেখানে মফস্সল-গ্রামাঞ্চলের ছেলেদের খুবই প্রিয় খেলনা, মার্বেলের, ছবি দেয়া। ক্যাপশন এ দেয়া - সেটাও নাকি বম্ব বানানোর উপকরণ। 

এদেশের মানুষ বাংলাদেশ পুলিশের মুখপাত্র হওয়াটা এই মূহুর্তে একমাত্র তারাই পারবে - যারা সারা দেশের সব মানুষকে রামছাগল ভাবে। 

কিন্তু আমার প্রশ্ন একটাই: এপ্রিল-মে মাসের ধর্মীয় গোষ্ঠির সমাগম/জাগরণ ভুলে যাওয়া - এটা কি রামছাগলের লক্ষণ নাকি গোল্ডফিশের লক্ষণ? 

----------------

Give away everything - the land, the borders, the forests, the water that is flowing, the garments that were flourishing. And now - the image that it was holding. You may buy the foreign minds with that. 

But never ever think you are going to sell the minds of the people of this country. 

Unless of course if you think we are all রামছাগল!

মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৩

বৈচিত্রময় দেশ থেকে ফিরে ...৪

4.

সাদা লুজ শার্ট আর জিন্সের প্যান্ট পরা ছিল মেয়েটি। বয়স ২৪-৩০ এর মধ্যে। চুলগুলো কোনোমতে একটা ঝুটি বেঁধে ছুটছে। একটা পা অচল - তারপরও ক্রাচে ভর করে এক লেকচার হল থেকে অন্য হলে ছুটে যাচ্ছে। দৃশ্যটি দেখে ইচ্ছা হচ্ছিল - আরো কিছুক্ষণ দাড়িয়ে দেখি। সে এক অন্যরকম ফিলিং। এত্তখানি কষ্ট করে - মেয়েটি কনভেনশনে হাজির হয়েছে হয়েছে শুধুমাত্র ইসলাম ধর্ম/এপ্লিকেশনের কথাগুলো শুনতে। 

ইসনা (ISNA - Islamic Society of North America) কনভেনশনে এমন কিছু দেখেছি - যা আমাকে ইসলামের মানবিক গুনাবলীগুলো নিয়ে আবার চিন্তা করতে শিখাচ্ছে। এখনো ওই দিনগুলো নিয়ে চিন্তা করতে থাকলে, এমনকিছু হটাত মনে পরে - যা আবার নতুন করে চিন্তা করতে শেখায়। আর মনে হয় দেশে আমরা যারা ইসলাম মানতে চাই (বা ইসলামের কথা বলি), তাদের আরো কতকিছু শেখার বাকি আছে। 

সামাজিক কিছু ব্যাধি আমাদের দেশের মানুষের ভেতর রয়ে গিয়েছে - জনম কা জনম (জেনেরালি স্পিকিং); সেটা থেকে ইসলামী-ধ্যান ধারণায় বিশ্বাসী এই আমরাও সেটার মূল উত্পাটন করতে পারিনি। ওই ক্রাচে ভর করা মেয়েটিকে আপাত দৃষ্টিতে দেখে আমাদের দেশের বেশিরভাগের একটা জাজমেন্ট আসত। 'জিন্স পরে আসছে মেয়েটা'... 'মাথায় একটু কাপড় দিলেও তো পারত - আল্লাহর নাম নেয়া হচ্ছে '... কিন্তু একারণে কত উত্সুক মানুষ যে দূরে ছিটকে যায় - তার হিসেব নেই।আমরা বেশিরভাগ ভাবিনা - সেই মেয়েটাকে দেখে আল্লাহর কুরআনের ওই আয়াত মনে পড়তে পারত, যেখানে আল্লাহ বলছেন - 'তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে ছুটে চল, যার সীমানা হছে আসমান ও জমিন, যা তৈরী হয়েছে মুত্তাকীদের জন্য' (সুরা আল-ইমরান, ১৩৩). হতে পারে ক্রাচে ভর করেই সে এই রেসে অনেকের আগে চলে যেতে পারে।

আরে, তাকওয়ার মাপ কি আল্লাহ আমাদের হাতে দিয়ে দিয়েছেন? [শুধু একটা উদাহরণ নেই - হিজাব করে যেই সওয়াব আয় করছি, তা এক গিবত দিয়ে যে উড়িয়ে দেই - আল্লাহর স্কোরিং এ আমাদের নেট স্কোর কত হয় তখন?] 

ওখানে একই জায়গায় বসে আছে - নিকাবি, হিজাবি, হিজাব-ছাড়া লুজ কাপড় পরা মেয়েরা; আবার টাইট জিন্স পরা মহিলাও। উদ্দেশ্য একই - একটু যদি শিখতে পারি। ওই দেশে যারা ইসলাম প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে, তাদের মেন্টাল ম্যাচিউরিটি অনেক বেশি। সেটা ওখানকার প্রতিটা লেকচারে রিফ্লেক্ট হয়েছে। আগ্রহকে কাজে লাগানোর ব্যাপারে ওস্তাদ। সব শুনে মনে হয়েছে - এদেশে একটা ম্যাস ট্রেনিং করতে হবে আমাদের নিয়ে। টপিক হবে -'হাউ টু এম্পাথায়জ উইথ ইউর পিপল'. 

এই এম্পাথী না থাকলে - ওই মেয়েটি ক্রাচে ভর করে লেকচার শুনতে আসতনা; আমার ঠিক পাশের সিটে বসা - সোনালী চুলের, সুট পরা, নেল পলিশ করা, Prada ব্র্যান্ডের ব্যাগ নিয়ে আসা গ্ল্যামারাস কর্পোরেট ভদ্রমহিলা, সে ইয়াসমীন মোগাহেদের লেকচার শুনে সাদা রুমাল দিয়ে চোখের পানি মুছ্তনা। হুইলচেয়ারে করে বয়স্ক ভদ্রলোক নতুন করে ইসলাম শিখতে আসতনা। আর না বয়স্ক এবং টিনেজার একটি টপিকে মন বসাতে পারত। তাও আবার আমেরিকার মত জায়গাতে।

মুহাম্মদ (স) এর পার্সোনালিটির উধাহরণগুলো কতই না সুন্দর করে উপস্থাপন করছে। 

Living the values - not talking the values.....and so unlike us! 
May He Guide us all....

[contd...]

বৈচিত্রময় দেশ থেকে ফিরে ...৩

3. 

প্লেন যখন ল্যান্ড করতে থাকে - যেকোনো শহর/এলাকার একটা বার্ডস-আই-ভিউ পাওয়া যায়। ১৯৯০ -৯৪ সাল পর্যন্ত ঢাকায় যখন প্লেন ল্যান্ড করত, তখন উপর থেকে অনেক সবুজ দেখা যেত - মাঝে মাঝে পানির প্রবাহ। কিছুদুর পর পর ঘন বসতি। দেখলেই চোখটা জুড়িয়ে যেত। আর ঠিক ২০ বছরের মধ্যে সেই দৃশ্য পুরা পাল্টে গিয়েছে; এখন ল্যান্ড করার সময় মনে হয় - একগুচ্ছ কংক্রিট নিয়ে কেও মুড়ির টিনের ভেতর ঝাকুনি দিয়ে ছুড়ে ফেলেছে। না আছে সবুজ, না কোনো নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আঁকা যায়। 

জে, এফ, কে এয়ারপোর্ট এ ল্যান্ড করার আগে উপর থেকে দেখে মনে হয় কিছু জ্যামিতিক-আকার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কেমন যেন গোছালো জ্যামাতিক সমষ্ঠি - তার মাঝে মাঝে সবুজ রেখা। মনে হচ্ছে এক অদৃশ্য ফ্রেম শহরের প্রতিটা ভাগকে আলাদা করে সিকুএন্স করে রেখেছে। যেমন ভিউ তেমন বাস্তব চিত্র। শহরের এক ল্যাম্প-পোস্ট থেকে শুরু করে ব্রিজ পর্যন্ত - সব একদম প্ল্যান্ড। কয়টা বাড়ি, কোথায় পার্ক, কোথায় অফিস, কয়টা কারখানা - সব লং টার্ম চিন্তা করে প্ল্যান হয়েছিল। অনেকে হয়ত ভাববে - উন্নত দেশ আর উন্নয়নশীল দেশের ভেতর পার্থক্য থাকবেই। থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ওই শহরের প্ল্যানতো আর এখন হয়নি। শত বছরের কাঠামো এখনো দাড়িয়ে আছে ওখানে। আর ওটাকে ঘিরেই তৈরী হয়েছে নতুনগুলো। 
সো - ইটস আ ম্যাটার অফ মায়্যান্ডসেট। 

তাই অলৌকিকভাবে আজ থেকে যদি এদেশের নেতা/নেত্রীরা সেরকম সুদূরপ্রসারী চিন্তা করেন - কয় বছর পর সেরকম জ্যামাতিক আকৃতির ভিউ দেখা যাবে ল্যান্ডিং এর সময় - আল্লাহ মালুম।

কয় বছর আগে - বুএটের আরবান প্ল্যানিং নিয়ে পড়াশোনা করা একজন বলছিল, ওই প্রতিষ্ঠানের অনেক এক্সপার্ট অনেক কাজ করেছেন ঢাকা প্ল্যানিং এর উপর। লিখিত আকারে পরামর্শও দিয়েছেন এই দেশের উপর-ওয়ালাদের। আজ পর্যন্ত কাজে দেয়নাই। এর ফল হচ্ছে - ঢাকা এমন পর্যায় চলে যাচ্ছে যে একটা নিরাপদ, বাসযোগ্য শহর করতে পুরাটা মুছে আবার গড়তে হবে। জ্যামাতিক আকৃতিতো অনেক পরে। আর্থকোএক-প্রণ পাতালের উপর এই নাজুক প্ল্যানিং। দেশপ্রেমিক ভর্তি এক দেশ। 

আমেরিকাতে ঢোল বাজিয়ে কেও কাউকে বলছেনা - যে সে দেশপ্রেমিক। সমষ্ঠিগত ভাবে দেশের জন্য কাজ হচ্ছে প্রতিটা জিনিসের অধিকারের উপর নজর দিয়ে (জেনেরালি স্পীকিং); হতে পারে সেটা আইন প্রয়োগের মাধ্যমে, কিন্তু মজ্জাগত হয়ে গেছে অভ্যাস। একটা শহর কিভাবে গঠন হবে - তা নিয়ে চিন্তা হয়েছে একশত বছর আগে। এই দেশপ্রেম হয়তো তাদেরকে অনেকটা সেল্ফ-সেন্ট্রিক করে ফেলছে (যা নিজেদের দেশের জন্য ভালো দেখাবে তাই করতে রাজি তারা); কিন্তু ফলাফল তারা ভোগও করে যাচ্ছে। 

তাই আজকে দেশে যখন খুঁজে বেড়াচ্ছি বাচ্চার খেলার জন্য একটা মাঠ, আর দূষণমুক্ত বাতাস - ওই দেশের বাচ্চাগুলার এটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে, তা ভাবতেই পারেনা। আর এই প্রজন্মকে দেশের ভবিষ্যতের সম্পদ হিসেবে দেখলে - আমাদের কোয়ালিটি কথায় থাকবে? 

সেই চিন্তা আমেরিকানরা আরো ১০০+ বছর আগে করে গিয়েছে। আর আমরা করছি পোস্টারিং। 

[Contd...]

বৈচিত্রময় দেশ থেকে ফিরে ...২

2. 

নিউ ইয়র্ক এর কিছু জায়গা আছে - যা বিভিন্ন কমিউনিটি দিয়ে অধ্যুষিত। 

জ্যাক্সন হাইটস এ গেলে বোঝার উপায় নাই, এটা আমেরিকার একটি অংশ। বাংলা অক্ষরে দোকানের নাম থেকে শুরু করে - দরজার উপর ভোটাভোটির পোস্টার; এমনকি জুমা'র খুতবা দিচ্ছে বাংলায়! দোকানে পাওয়া যাচ্ছে সাতকরা আর জাম্বুরা। 

চার্চ এভেনিউতে চায়না টাউন। সবকিছু চাইনিজ। গ্রসারি সপে পাওয়া যায় কচ্ছপ আর স্কুইড। অবশ্য চায়না টাউন একটা ইউনিভার্সাল কনসেপ্ট। সব দেশেই থাকে। ব্রুকলিন এ 78th street - আরব স্ট্রিট। ওখানে গেলে রাস্তা ঘাটে আরবী ভাষায় কনভার্সেশন শোনা যাচ্ছে। কাউকে দেখেই বোঝা যায় আরব, আর কেও পুরাই পশ্চিমা বেশে। দোকানে বাকলাভা আর পনিরের বাহার, আতর, বোরখা...

আরব স্ট্রিটের এক দোকানে আমি আর আব্বা (শশুর-আব্বা) গিয়েছিলাম। দোকানদার ২ জনই মহিলা। ২জনই কালো বোরখা পড়া। একজনের চেহারা নিকাব দিয়ে ঢাকা। যেই জিনিসটা আমরা নিব - নিকাবী ভদ্রমহিলা সেটার দাম ৫ ডলার কম বলল। হিসাবে ভুলের কথা তুললে, সে বলল, 'That's because you wear the niqab'. মনটা অজান্তেই এত ভালো হয়ে গেল - বলার মত না। মনে হলো এইত আমরা একই গ্যাং এর ! এখানে শেষ না - যখন চেঞ্জ ফেরত দিল - ১০ ডলার বেশি ফেরত দিল। বলল, 'This is for you, sweetheart'!! 

কি বলব বুঝে পেলাম না - ধন্যবাদ দেয়া ছাড়া। জিগ্যেস করলো - 'Is that your father?' আমি বললাম, 'Father-in-law'. আব্বা তখন আবার বললেন, 'I have only one son'. মহিলা সাথে সাথে উত্তর দিল, 'Masha Allah. And I pray you have 7 grandsons'! 
হাসি খুব কষ্টে আটকে রাখলাম। কারণ জানতাম, আরবদের কাছে এটাই বড় দু'আ। 

ভাষা শুনেই বুঝতে পেরেছিলাম মিশরীও অরিজিন। ঠিক ওই সময়টাতে মিশরে চলছিল ধর্মীয় লোকদের নিধন অভিযান। সেই মানুষগুলোর সাথে রিলেট করতে সময় লাগলনা। আল্লাহ যেন এসব পরিষ্কার মনের মানুষগুলোকে রাহম করেন। 

কস্টকো-র ঘটনা যেই খারাপ স্ট্যাম্প মাথায় ছিল - ওটা কিছুটা হলেও হালকা হলো। 
[contd..]

সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৩

বৈচিত্রময় দেশ থেকে ফিরে ...১


আমেরিকা দেশটা একটা সালাদ বউল, তারমধ্যে নিউ ইয়র্ক আরো বেশি। কে আমেরিকান আর কে না বোঝা মুশকিল; সাবওয়ে ট্রেন গুলাতে উঠলে বোঝা যেত দেশটা একই সময় চীন, ইন্ডিয়া, পেরু এবং এরাবিয়ার লোক দিয়ে একাকার হয়ে গিয়েছে। টুরিস্ট ছাড়া সব আমেরিকান। বলা হয় 'ইটস ল্যান্ড অফ অপর্টিযুনিটি'....তাই পৃথিবীর সব কোন থেকে মানুষ ছুটছে সেই দেশে। বলা হয় 'ইটস এন ওপেন সোসাইটি' - সবার জন্য খোলা। 

আম্মারকে নিয়ে খোলা জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার মানে ছিল একটা ম্যারাথন। খোলা জায়গা মানেই তার কাছে খেলার মাঠ। আর শপিং সেন্টার হলে তো কথায় নেই - খেলার মাঠ, সাথে ফ্রি হাতের নাগালে টেনে নামানোর জিনিস। পিছু নিতে ২ জন আর দৌড়াতে লাগত ১ জন। কারো শপিং কার্টের সামনে আর কারো চলার পথে গিয়ে থেমে যেত। আর বারবার সরি বলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া একটা রুটিন হয়ে গিয়েছিল।

ওখানে কিছু শপিং ব্র্যান্ড আছে - যেগুলো প্রতিটা স্টেট এই দেখা যাবে। এক একটা বিশাল জায়গা জুড়ে এরকম নামকরা ৬-৭ টা শপিং ব্র্যান্ড একসাথে করে রেখেছে তারা। এরকম একটা ব্র্যান্ড হচ্ছে কস্টকো। কস্টকোর বৈশিষ্ঠ একটু ভিন্ন - কিনলে হোলসেলে কিনতে হবে। সাবান কিনতে গেলে - ১৬ টার কমে না। বাচ্চাদের ডায়াপার কিনতে গেলে - একবারে ৮০টার প্যাকেট। চকলেটের এক প্যাকেটে ২০০টা। সস্তা পরে দেখে অনেকেই যায় - কযেক সপ্তাহের বাজার করে আনার জন্য। হাইলি কমার্শিয়াল এক দেশ - ক্রেতারও কমতি নেই। হাতের নাগালে সবকিছু দিয়ে দেওয়া। ভ্যারাইটি এবং চয়েস এর বাহার সবকিছুতেই। সারা সপ্তাহ ধরে ৮-১২ ঘন্টা করে খাটতে হবে - প্রতিদিনের জীবনে সেই খাটুনির ফল পায় এসব চয়েসের মধ্য দিয়ে। 

সেদিন কস্টকোর আইলের ভেতর আম্মারকে খুঁজে বের করে যেই কোলে ওঠাতে যাব - এক বয়স্ক মহিলার সামনে গিয়ে সে দাড়িয়ে গেল। সাথে সাথে 'সরি' বলে ওকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম - মহিলা তখন আমাকে কন্ফ্রণটিঙ ভাব নিয়ে জিজ্ঞেস করলো - 'Why do you wear that on your face?' [নীকাব দেখে বলল]

প্রথমে একটু হকচকিয়ে গেলাম। সাথে সাথে মনে হলো - জিজ্ঞেস করতেই পারে; কারণ শুধুমাত্র হিজাব পরে এরকম মহিলার সংখ্যাই কম।

বললাম, 'It's because of my religious belief'

তখন সে বেশ রুক্ষভাবে বলল, 'It is NOT your religious belief. I know it's NOT your religious belief. Your religion doesn't ask you to do that'

বুঝতে বাকি রইলোনা - সে জানার জন্য আমাকে প্রশ্ন করছেনা।

আমার ননদের দিকে দেখিয়ে বলল (সে হিজাব পরে) - 'She doesn't put that thing on her face. Why don't you just cover like that?'

ধৈর্য ধরে উত্তর দিলাম, 'It's a choice. You have the choice to pick which you would prefer. There are several interpretations to pick from'.

সে তখন আরো উচ্চ গলায় বলল, 'Don't give me that. I have studied your religion. Do you know why I think you do that? I think it's because you are a terrorist.' 

:-|কি আশ্চর্য!

এর আগে অফিসের কাজের কারণে Scandinavian লোকজনের সাথে মিশেছি। মিশে মনে হয়েছিল - ওদের কাছে 'নিকাব' কোনো সময় - individual choice of an independent woman - মনে হয়না। কিন্তু তাদের প্রশ্নের জবাবে যখন বুঝিয়েছি এটাই আমার ইচ্ছা - my choice - তখন তারা সেই choice কে শ্রদ্ধা দেখিয়েছে। ধর্মের এই বিধানের অন্তর্নিহিত কারণ জানতে চেয়েছে।

কিন্তু এই মহিলা ছিল ভিন্ন। সে ক্ষোভে ফেটে পরছিল - এই আমি এই রকমের পোশাকে তার সামনে দিয়ে যাচ্ছি, সেটাই সহ্য হচ্ছিলনা।

আমি তারপরও ঠান্ডা মাথায় বললাম, 'Not a single terrorism act in recent years inside US was done by people who cover their faces, was it?'

সে তখন আরো ক্ষেপে গেল। বলল, 'How do I know what your face looks like? You wouldn't show your face to me, would you? Because you are one.'.

মহিলাকে যখন তাও দেখালাম, সে একটু থেমে আবার বলল - 'But I still think you are a terrorist'.
মহিলা চলে গেল।

বেশ! আমার নিকাব না, আমার চেহারাও এখন 'terrorist' !

এমনও হয়েছে - ঠোঁটে সিগারেট, হাত-পায়ে টেট্টু এবং ভ্রুর উপর পিয়ার্স করা মহিলা বের হয়ে যাবার সময় আমার জন্য শপিং সেন্টারের দরজা ধরে রেখেছে যাতে বাচ্চাসহ সহজে বের হতে পারি। আবার কারো মুখের উপর অন্য কাউকে 'terrorist' গালি দিতেও বাঁধেনা। 

An open society, alright. Openness with some ‘if-s’ and ‘but-s’. 

(Contd...)