২০১৪ সালে এসে বিশ্বজুড়ে মিডিয়াগুলো তোলপার হয়ে যাচ্ছে ইরানের মারয়িয়াম হসেন্জাদেহর নিজের ছেলের খুনীকে শুধুমাত্র চর মেরে, ক্ষমা করে ফাঁসির মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনার দৃশ্য নিয়ে।
আর ফেসবুকে সেটা শেয়ার হচ্ছে, মানুষকে চমক লাগিয়ে দিচ্ছে।
নিজের প্রানের থেকেও প্রিয়, জীবনের সবটুকু দিয়ে বড় করা ছেলের খুনীকে ক্ষমা করে দিতে কতবড় দিলের অধিকারিনী হতে হয় তা মায়েরাই বুঝবে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে এরকম চমক শারিয়াহ বাস্তবায়িত অঞ্চলে প্রথম না আবার শেষও না।
১৯৯২-৯৩ সালে সৌদির দক্ষিনাঞ্চলে যখন ছিলাম তখন আমাদের শহরের কাছেই এরকম এক খুনী কারাগারে ~১০ বছর ধরে প্রহর গুনছিলো কবে তারই হাতে খুন হওয়া লোকের ছেলে প্রাপ্তবয়স্ক হবে আর তখন সিদ্ধান্ত হবে তার ফাঁসি হবে নাকি না...
ওই বছর যখন ছেলে সিদ্ধান্ত দেবার মত বয়সে পৌঁছলো - ছেলে তার বাবার খুনীকে মাফ করে দিলো।
আরেক ঘটনা বিবরণ এরকম ছিল যে এক মা তার ছেলের খুনীকে এই শর্তে ক্ষমা করে দিয়েছিল যে সে কোরআনের হাফেজ হয়ে যাবে।
এখানে কোনভাবেই এক ক্ষমাকারীর অবস্থান অন্যজনের সাথে তুলনীয় না। বরং এক একজন এক এক দিক দিয়ে ভিন্নরকম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছে।
এসব উধাহরণ যেসব দেশের নর্ম/কালচার সেই দেশ থেকে ফিরে এসে আমার দেশের আধুনিক সুশীল-সমাজের ধারক আর বাহকদের কাছ থেকে যখন শুনতে হত - 'এত ব্যাক ডেটেড আরবরা - সেই পুরানা আমলেই রয়ে গেছে', তখন মনে মনে ভাবতাম মন-মগজের দিয়ে আমরা নিজেরাই পেঁছনে থেকে অন্যদের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে হাসি আর সেই অজ্ঞতার জন্য আমাদের লজ্জাবোধও হয়না।
দশক দশক ধরে চলে আসা সেই চমক লাগানো সভ্যতা আমাদের কাছে নতুন মনে হয়...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন