বেশিক্ষণ যায়নি - ভেতর থেকে কেমন যেন একটা শব্দ আসতে লাগলো। কয়জন দরজায় কান লাগিয়েও বুঝলো না কি হচ্ছে। বাইরে

সারার ছোট ভাইটা যখন ১.৫ কি ২ বছর বয়স, তখন সৌদি আর বাংলাদেশ - ২ দেশেই টিভিতে দেখানো শুরু হলো Macgyver। সারারা তখন দেশে, আর আমরা সৌদিতে। তার যখন সৌদিতে ফিরল - তখন ওই ১.৫ বছর এর পুচকার দেখি চুল পিছন দিয়ে একটু লম্বা, সামনে দিয়ে ছাঁটা। চুল নাকি সে আঁচরায়না। হাতে সব সময় হয় একটা ছোট গাড়ি নাহয় screw driver। আর কেও তাকে তার আসল নাম ধরে ডাকলে সে রেগে যাচ্ছে। সে একটা বোতলে তেল নিয়ে - সেটা ঢেলে ফেল দিল, হাতে একটা ফিতা বেঁধে সেটা ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলল; তারপর সে announce করত, 'আমি Macgyver'।
আরব বাচ্চারা ছিল বিচ্ছুর দল। বিদেশী বাচ্চাদের দেখলেই বেড়ে যেত ওদের মারামারি করার প্রবণতা। পাথর মারা ছিল তাদের বৈশিষ্ট; গাড়ির ছোট inidcator লাইট গুলা প্রায়ই ভাঙ্গা পাওয়া যেত - কারণ কোনো এক বাচ্চা পাথর ছুড়ে গুড়িয়ে দিয়েছে। এক পর্যায় গিয়ে - সে এক পক্ষের 'অত্যাচার' সহ্য হলনা। একদিন, হুট করেই ফাহিমাদের বাসার সামনে পুরা রণক্ষেত্র হয়ে গিয়েছিল। ওদের বাড়িওয়ালা ছিল সৌদি, সেই বাড়িওয়ালার ছেলে তার দল বল নিয়ে পাথর আক্রমন শুরু করলো। শুরু হলো সৌদি বনাম বাঙালি বাচ্চাদের মারামারি। পাথর ছোরা থেকে শুরু করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া - কোনটাই বাদ থাকেনি। মারামারির সময় পুরা ধুলা উড়ে চারিদিকে তোলপার হয়ে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ যাবার পর আন্টি (ফাহিমার আম্মা) রান্না ঘরে কি করতে গিয়ে জানালা দিয়ে দেখে বাইরে ধুলা বালি উড়ে একাকার! বের হয়ে দেখে তুমুল মারামারি চলছে। সব মা'রা বের হয়ে যেই উঠানে আসল - অমনি সৌদিগুলো দিল দৌড়। আর আমরা মনে করলাম - বেশ এক কাজ করেছি! হাত পা ছিলে ফেরত এসে মনে হলো - এর চেয়ে বড় বীরত্ব জীবনে দেখায়নি! :P এই মারামারির পর confidence বেড়ে গিয়েছিল। এরপর আমাদের বাসার সামনে যখন দোলনা খেলতে গিয়ে ফিলিস্তিনি বাচ্চারা সেটা কেড়ে নিতে এসেছিল - তখন দোলনা দিয়েছিলাম ঠিকই - কিন্তু একদম ছুড়েই দিয়েছিলাম. আর সেই দোলনা গিয়ে লেগে গিয়েছিল ফিলিস্তিনি মেয়ের ঠোঁটে!
(To be continued...)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন