শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৫

বৈশাখী কলঙ্ক আর এরপর


১. ইউনিভার্সিটি এলাকার কলঙ্কজনক অপরাধের দায় যে বা যারা মহিলাদের কাপড়চপরের উপর চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে কিংবা সেটাকে একটা 'পরিনতি' হিসেবে দেখছে - তাদের মানসিকতা কোন পর্যায়ের বিকৃত তা বোধগম্য না।  অপরাধীদের অপরাধ এত খাটো করে দেখে, তাদের ছুটে যেতে সাহায্য করা ছাড়া আর কিছু হাসিল করছে বলে মনে হয়না।  আল্লাহর আইন যারা জানে তারা বুঝে উত্যক্ত করার নেগেটিভ স্কোর কতখানি আর 'অশালীনতার' নেগেটিভ স্কোর কতখানি। যে অপরাধের শাস্তি সর্বোচ্চ করে দেয়া হয়েছে আল্লাহর আইনে এবং দুনিয়াতেই বাস্তবায়নের কথা বলা আছে, তারা সেই ধরনের অপরাধকে এই দল শুধুমাত্র একটা পরিনতি হিসেবে দেখছে। আর যেসব কাজের বিচারের দায়ভার আল্লাহ নিজের হাতে রেখেছেন - সেই বিচার তারা করছে, তাও এই বিকৃত ধারণক্ষমতা নিয়ে।

২. আরেক সেল্ফ রাইটিয়াস, এলিটিস্ট দল যাদের এক চোখ সবসময় বন্ধ থাকে - এতদিন একই অপরাধীদের দ্বারা 'ওরা' অত্যাচারিত ছিল, কিন্তু ভিকটিম যেহেতু 'ওরা', আর অপরাধীরা যেহেতু 'আমরা আমরাই', তাই কোনো উচ্চ বাচ্য করার প্রয়োজন বোধ করেনাই ।  সেক্ষেত্রে কোনো নারী কারণ ছাড়া আটক হলো, না খুন হলো, না শ্লীলতাহানী হলো, না একেবারে গুম হয়ে গেল - তাতে কি আসে যায়? ভার্চুয়াল জগতে এরাই প্রতিপক্ষর শ্লীলতাহানির দাবী তুলে - আবার এরাই মাঝে মাঝে ঋষি সেজে বসে।  লিটনদের হাত ভাঙ্গে, কিন্তু কলেজ শিক্ষক মিজানরা আর বোনের সম্ভ্রম রক্ষার্থে নাসিররা একই কারণে জীবন দিয়ে দেয়। লিটনরা হয়ে যায় সেলেব্রিটি - কিন্তু মিজান ও নাসিরদের ভুলে যায় সবাই। বাঙালী জাত ভার্চুয়াল জগতে জাগ্রত হয়; শুরু হয়ে যায় সেলেব্রেশন অফ দা এলিটিস্ট।   

৩. এক বিশেষ দল পুরা জিনিসটাই সহজ করে দেয়ার বিশাল দায়িত্ব নিয়ে বলছে "এগুলো আগেও হয়েছে - তখন মিডিয়াতে আসেনাই - এখন আসে"; এই সো-কল্ড শিক্ষিতদের ভাবখানা এমন যে 'এতো পান্তাভাতের  মত সহজ; অপরাধীরা নতুন কিছু তো করেনি - হই হুল্লোর কিসের'?  

৪. রাস্তা ঘাটে কিছু বিলবোর্ড দেখা যাচ্ছে আজকাল। কোনো সেন্সরশিপ নাই - কারো কোনো মাথা ব্যথাও নাই।  নারীদের সম্ভ্রম নন-ফিসিকাল উপায়ে হরণ হয়ে যাচ্ছে দিনে সহস্রবার; তার কোনো ইয়ত্তা নাই।  "৬ মিনিটে চকলেট থেকে ভেনিলা ফ্লেভার" - আইসক্রিমের এই আবেদন হচ্ছে নারীর বিভন্ন শেডের চেহারায়।  আহ - কি সম্মান নারীর! আফটার অল - 'ইটস মাই চয়েস'।  

৫. সমাজের যে এক সোশাল সিস্টেম এর কারণে এককালে অশ্লীল কাজ কিছুটা হলেও কন্ট্রোলে থাকত - সেই সিস্টেম 'উদারপন্থীদের' পছন্দ হয় নাই।  হুজুর জাত আর ছাগু জাতদের সব ধরনের কাজের বিঘ্ন ঘটিয়ে - এবং তার কোনো অল্টারনেটিভ না প্রতিষ্ঠা করে সমাজকে তারা 'উম্মুক্ত' করছে। আর দেশের প্রমানীত সবচেয়ে বড় অপরাধীদের তা দিয়ে - দৈত্য বানিয়ে ফেলছে।  এর শেষ কোথায় - তা আল্লাহ মাবুদই জানেন। কিন্তু উম্মাদনায়ও যে আমরা প্রতিবেশী দেশের অঙ্গরাষ্ট্র হতে সক্ষম তা প্রমান হচ্ছে।

আর এক গান প্রতি বৈশাখেই কানে বাজতে বাধ্য হয় - "বখাটে ছেলেদের ভিড়ে ললনাদের রেহাই নাই"। ফুর্তিতে বাজে কিন্তু।