৮-৯ বছর আগের কথা। আদিল তখন ক্লাস ৭-এ। সে ছিল গ্রামের সবচাইতে দুষ্টু বাচ্চাগুলোর একজন। কেও তার সাথে গাছ বাইতে সাহস করত না - কারণ সবচেয়ে উঁচু গাছ সে বেয়ে উঠত। সাতারে কেও তাকে হাঁরাতে পারত না। ক্লাসেও ছিল তুখোর। মা'র বকুনি দেবার চান্সটাও থাকতনা - শুধু দৌড় আর দৌড়। ২ পা যেন দিক্বেদিক ছুটেই চলছে। তার দৌড় যেন সবকিছু নিয়ে - একটু বেশি তারাহুরা সবকিছুতে।
সেদিন সে দেখছিল বাসার চালের ঠিক উপরে আম ঝুলছে; মাত্র আম ধরা শুরু হয়েছে। ব্যস - উঠলো সেই ডালে। যে ছেলের কাছে নারিকেল গাছ বেয়ে উঠা ব্যাপার না - সেই ছেলেই ঐদিন পিছলে গেল ছোট একটা ডাল বেয়ে উঠতে গিয়ে। আর ওখানেই শেষ হয়ে গেল তার দৌড় - সেই তড়িত গতির ২পায়ের দৌড়। ব্যাথায় চিত্কার করতে লাগলো। সদরের ডাক্তার বুঝলো আদিলকে সে কোনো উপকার করতে পারবেনা। চঞ্চল সেই আদিলকে নিয়ে আসা হলো ঢাকায়। এক্স, রে, করে দেখা গেল - মেরুদন্ডের নিচের দিকটা একেবারে টুকরো হয়ে গেছে। অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হলো। শুধুমাত্র তাকে বাচানোর জন্য। হুট করে দরকার হলো রক্তের। ভাগ্যের জোরে আমার রক্তের সাথেই মিলে গেল সবকিছু তে। জীবনের প্রথম রক্ত দেয়া - চঞ্চল আদিলের জন্য। ও বেঁচে গেল - কিন্তু চিরতরে সেই হারিয়ে ফেলেছিল তার দুরন্ত পায়ের সব জোর। আল্লাহই জানেন এর মধ্যেও নিশ্চই কোনো উপকার আছে তার জন্য।
তার ছোট্ট ভাইকে সেবার সে বলল – ‘ও আমার ভাইটা , তোর পা ২টা আমাকে দিবি? আমি কথা দিচ্ছি সারা জীবন তোকে আমি কোলে নিয়ে বেড়াব’।
যেই মা অতিষ্ট হয়ে যেত আদিলের চঞ্চলতায় - সে বাকরুদ্ধ।
সি,আর,পি, তে থাকলো কিছুদিন - নিজের উপর নির্ভর করতে শিখল, হাতের কাজ তার বাড়তে লাগলো। গ্রামে ফিরে গেল। কিন্তু সেখানে গিয়ে সে হয়ে গেল - শো পিস। সবাই দেখতে আসল তাকে - কিভাবে সে হাত দিয়ে সব কাজ করছে, আর পা ২টা নিস্তেজ হয়ে আছে। ক্লাসে যেতে গেলে - রাস্তা দিয়ে সবাই তার পিছে যাওয়া শুরু করলো। self-prestigious তার মন আর মানলনা - ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিল। বাসায় বসে একটু আধটু পড়ল। আসতে আসতে দিন গড়িয়ে তার সহপাঠীরা ক্লাস ১০ এ উঠলো। মেট্রিক পরীক্ষা দিতে গেল। তার কাছে অঙ্ক আর ইংলিশ পড়তে আসা ছাত্রগুলো খুব ভালো রেজাল্ট করলো। সে বসে রইলো বাসায় তার খাটের উপর।
পরিবারেরই অনেকে চিন্তা করতে লাগলো - কার উপর তার নির্ভর করে থাকতে হবে সারা জীবন? কে তার দায়িত্ব নিবে? তার খরচের ভার কে সামলাবে? উটকো ঝামেলা কে পোহাবে? সামনা সামনি বলতেও অনেকে দীধা বোধ করলোনা। ওই সময় - বেড়াতে যাওয়া হয়েছিল গ্রামে। তখন খুব করে বুঝিয়েছিলাম আমি আর আমাদের এক ভাবী মিলে।
আসতে আসতে তার মনের জোর একটু ফিরতে শুরু করেছে। নিজ থেকে খুঁজে বের করেছে রাজশাহীর এক প্রতিষ্ঠান - যেখানে পক্ষাঘাতগ্রস্থদের নিয়ে একটা স্কুল আছে। এখন সে সেখানে নিজেই থাকছে। আর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে - তার সেই অদম্য চঞ্চলতাকে ফিরিয়ে আনতে।
===============================
আদিল এবার মেট্রিক পরীক্ষা দিচ্ছে - তার সেই ছোট্ট ভাইটার সাথে। টেস্টে গোল্ডেন-এ পেয়েছে।
এই মাত্র ফোন করে জানালো -বাংলা পরীক্ষা দিয়ে এসেছে।
এই ভাইটার জন্য সবার কাছে দো'আ চাচ্ছি। আল্লাহ কার হাতকে কবুল করবেন - একমাত্র তিনি জানেন!
সেদিন সে দেখছিল বাসার চালের ঠিক উপরে আম ঝুলছে; মাত্র আম ধরা শুরু হয়েছে। ব্যস - উঠলো সেই ডালে। যে ছেলের কাছে নারিকেল গাছ বেয়ে উঠা ব্যাপার না - সেই ছেলেই ঐদিন পিছলে গেল ছোট একটা ডাল বেয়ে উঠতে গিয়ে। আর ওখানেই শেষ হয়ে গেল তার দৌড় - সেই তড়িত গতির ২পায়ের দৌড়। ব্যাথায় চিত্কার করতে লাগলো। সদরের ডাক্তার বুঝলো আদিলকে সে কোনো উপকার করতে পারবেনা। চঞ্চল সেই আদিলকে নিয়ে আসা হলো ঢাকায়। এক্স, রে, করে দেখা গেল - মেরুদন্ডের নিচের দিকটা একেবারে টুকরো হয়ে গেছে। অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হলো। শুধুমাত্র তাকে বাচানোর জন্য। হুট করে দরকার হলো রক্তের। ভাগ্যের জোরে আমার রক্তের সাথেই মিলে গেল সবকিছু তে। জীবনের প্রথম রক্ত দেয়া - চঞ্চল আদিলের জন্য। ও বেঁচে গেল - কিন্তু চিরতরে সেই হারিয়ে ফেলেছিল তার দুরন্ত পায়ের সব জোর। আল্লাহই জানেন এর মধ্যেও নিশ্চই কোনো উপকার আছে তার জন্য।
তার ছোট্ট ভাইকে সেবার সে বলল – ‘ও আমার ভাইটা , তোর পা ২টা আমাকে দিবি? আমি কথা দিচ্ছি সারা জীবন তোকে আমি কোলে নিয়ে বেড়াব’।
যেই মা অতিষ্ট হয়ে যেত আদিলের চঞ্চলতায় - সে বাকরুদ্ধ।
সি,আর,পি, তে থাকলো কিছুদিন - নিজের উপর নির্ভর করতে শিখল, হাতের কাজ তার বাড়তে লাগলো। গ্রামে ফিরে গেল। কিন্তু সেখানে গিয়ে সে হয়ে গেল - শো পিস। সবাই দেখতে আসল তাকে - কিভাবে সে হাত দিয়ে সব কাজ করছে, আর পা ২টা নিস্তেজ হয়ে আছে। ক্লাসে যেতে গেলে - রাস্তা দিয়ে সবাই তার পিছে যাওয়া শুরু করলো। self-prestigious তার মন আর মানলনা - ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিল। বাসায় বসে একটু আধটু পড়ল। আসতে আসতে দিন গড়িয়ে তার সহপাঠীরা ক্লাস ১০ এ উঠলো। মেট্রিক পরীক্ষা দিতে গেল। তার কাছে অঙ্ক আর ইংলিশ পড়তে আসা ছাত্রগুলো খুব ভালো রেজাল্ট করলো। সে বসে রইলো বাসায় তার খাটের উপর।
পরিবারেরই অনেকে চিন্তা করতে লাগলো - কার উপর তার নির্ভর করে থাকতে হবে সারা জীবন? কে তার দায়িত্ব নিবে? তার খরচের ভার কে সামলাবে? উটকো ঝামেলা কে পোহাবে? সামনা সামনি বলতেও অনেকে দীধা বোধ করলোনা। ওই সময় - বেড়াতে যাওয়া হয়েছিল গ্রামে। তখন খুব করে বুঝিয়েছিলাম আমি আর আমাদের এক ভাবী মিলে।
আসতে আসতে তার মনের জোর একটু ফিরতে শুরু করেছে। নিজ থেকে খুঁজে বের করেছে রাজশাহীর এক প্রতিষ্ঠান - যেখানে পক্ষাঘাতগ্রস্থদের নিয়ে একটা স্কুল আছে। এখন সে সেখানে নিজেই থাকছে। আর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে - তার সেই অদম্য চঞ্চলতাকে ফিরিয়ে আনতে।
===============================
আদিল এবার মেট্রিক পরীক্ষা দিচ্ছে - তার সেই ছোট্ট ভাইটার সাথে। টেস্টে গোল্ডেন-এ পেয়েছে।
এই মাত্র ফোন করে জানালো -বাংলা পরীক্ষা দিয়ে এসেছে।
এই ভাইটার জন্য সবার কাছে দো'আ চাচ্ছি। আল্লাহ কার হাতকে কবুল করবেন - একমাত্র তিনি জানেন!